About Us | Contact Us |

প্রতি ৪৫ মিনিটে ১ জন শিশুকে হত্যা, ইজরায়েলের শিশু নিধন যজ্ঞ চলছে

লিখেছেন : রাধাপদ দাস
প্রতি ৪৫ মিনিটে ১ জন শিশুকে হত্যা, ইজরায়েলের শিশু নিধন যজ্ঞ চলছে

"Gaza is becoming a graveyard for children", জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস ২০২৩ সালের ৬ই নভেম্বর ইজরায়েলের গাজা দখলের অভিযানের পর শিশুদের উপর যে আক্রমণ নামিয়ে এনেছিল, সেই পরিস্থিতিতে এই মন্তব্য করেছিলেন। সেই যুদ্ধ আজ প্রায় ২ বছর হতে যাচ্ছে, কিন্তু জাতিসংঘের মহাসচিবের সেই বক্তব্য যে কতটা বাস্তবসম্মত, নিচের তথ্য থেকে আমরা তা বুঝতে পারবো।

ইজরায়েলের শিশু নিধন যজ্ঞ যদি এইভাবে চলতে থাকে, তাহলে আর কয়েক বছর পর গাজাতে কেউ কোন শিশুর মুখ দেখতে পাবে না। খেলনা নেওয়ার জন্য কোন শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাবে না। স্কুলে কোন কচি কাঁচা বা শিশুদের পড়াশুনার আওয়াজও পাওয়া যাবে না। শিশু বিহীন শৈশব ছাড়া এক সমাজ সভ্যতার সাক্ষী হতে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। এবং এই রকম এক সমাজ তৈরি হবে শুধুমাত্র শিক্ষিত মানুষের নীরবতায় শিশুদের উপর এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মেরে ফেলার জন্য। কারণ গণহত্যায় মেতেছে ইজরায়েল। প্যালেস্টাইনের গাজা দখল করেই সন্তুষ্ট নয়, সেখানকার সমস্ত মানুষকেও তারা হত্যা করতে চায়, বিশেষ করে শিশুদের। ভবিষ্যতে কোন প্রজন্ম যাতে না থাকে, সেই লক্ষ্যে তারা এগাচ্ছে। গত ৭ই অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইজরায়েল যে গাজা দখলের অভিযান শুরু করেছিল, এই পর্যন্ত মোট ৫৬,৩৩১ জনকে হত্যা করেছে, তার মধ্যে আহত ১,৩২,৬৩২ জন। আর ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৫০ হাজারের অধিক শিশুকে হত্যা এবং আহত করেছে ইজরায়েল। আলজাজিরা টিভির তথ্য অনুযায়ী ১৭,৪০০ জন শিশুকে তারা হত্যা করেছে গত ৫৩৫ দিনে। অর্থাৎ প্রতি ৪৫ মিনিটে ১ জন বা প্রতি দিনে ৩০ জন শিশুকে তারা হত্যা করছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের রিপোর্টে যে ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে প্রতি ১০০ জন শিশুর মধ্যে ২ জনকে হত্যা করা হয়েছে, ২ জন নিখোঁজ, ২ জন আহত, ৫ জন অনাথ, ৫ জন অপুষ্টির শিকার। যে শিশুদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৮২৫ জনের বয়স ১ বছরেরও কম, ৮৯৫ জনের বয়স ১ বছর, ৩২৬৬ জনের বয়স ২-৫ বছরের মধ্যে, ৪০৩২ জনের বয়স ৬-১০ বছর, ৩৬৪৬ জনের বয়স ১১-১৪, ২৯৪৯ জনের বয়স ১৫-১৭ বছর। এখনো যেটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ৮৮৯৯ জন ছেলে এবং ৬৭১৪ জন মেয়ে রয়েছে। বর্তমানে সমস্ত স্কুল এবং হাসপাতাল বা তো বন্ধ, না হয় বোমা মেরে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড়ো হত্যাকাণ্ড ঘটেনি সারা বিশ্বে। একটি দেশ দখল করার পর হত্যা লীলায় মেতেছে ইজরায়েল, উপর থেকে বোমা ফেলে, কামান বা বন্দুকের খাবার বানাচ্ছে শিশুদের। দিনের পর দিন শিশুদের রক্তে গাজার মাটি লাল হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর সমস্ত দেশ, সমস্ত মানবাধিকার সংগঠন, জাতিসংঘসহ সমস্ত প্রতিষ্ঠান যুদ্ধ বন্ধ এবং হত্যাকাণ্ড রোধ, বিশেষ করে শিশুদের রক্ষা করার জন্য রয়েছে। আধুনিক এই বিশ্ব সভ্যতায় সবাই শিশুদের উপর এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, কিন্তু অদ্ভুতভাবে সবাই প্রায় নীরব দর্শক। এরা সবাই এখন শিশুদের রক্ষাকারীর পরিবর্তে শিশুদের লাশ গোনার সংগঠনে পরিণত হয়েছে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গঠিত হয়েছিল জাতিসংঘ, যাতে আগামী দিনে পৃথিবীতে বড়ো কোন যুদ্ধ বা হত্যাকাণ্ড ঘটাতে না পারে কোন দেশ। কিন্তু এখন আমরা দেখছি সেই জাতিসংঘও আমেরিকার অঙ্গুলী হেলনে প্রায় এই হত্যালীলা দেখা এবং শিশুদের লাশ গোনার যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। সেই জাতিসংঘের মিডিল ইস্ট এবং উত্তর আফ্রিকার ইউনিসেফের ডিরেক্টর Edoward Beigbeder-এর প্রতিবেদনে খুব ভয়ঙ্কর সব ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। যেমন ২৭শে মে ২০২৫-এর প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন, "Early Monday we saw images of a small child trapped in a burning school in Gaza city. That attack in the early hour of the morning, reportedly killed 31 people including 18 children".

একই রকম ভাবে অন্য আর একটি প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন যে "On Friday, we saw videos of the bodies of burnt dismembered children from the al- Nijjar family being pulled from the rubble of their home in Khan Unis of 10 sibling under 12 years old, only one reportedly survived with critical injuries." এটি বর্তমানের জাতিসংঘের অধীনস্থ ইউনিসেফ, যারা সারা পৃথিবীর শিশুদের রক্ষার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়ে থাকে। এটি তাদের বাস্তব অবস্থা। অর্থাৎ, তারা প্রতিবেদন লেখা, কিছু খাদ্য সরবরাহ এবং মৃত্যুর সংখ্যা গুনে রাখা ছাড়া আর কোনো ভূমিকাই আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

দ্বিতীয় ধাপে তারা এই হত্যা লীলা চালানোর জন্য ক্ষুধার্ত মানুষদের ত্রাণের লাইনে টার্গেট করছে। বর্তমানে আরো যে ভয়ানক তথ্য প্রকাশ্যে আসছে, তা হলো ত্রাণ নিতে আসা প্রায় ৬০০ জন মানুষকে তারা গুলি কবে হত্যা করেছে গত এক মাসে। এই নিবস্তু মানষদের হত্যা করার জন্য ইজরাইলি সেনাদের গোপন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইজরায়েলের Haaretz নিউজ পেপারের প্রতিবেদন অনুযায়ী। "Israel troop in Gaza were ordered to shoot at unarmed Palestinians at the GHF site, with one soldier describing this scenes as a "killing field"অর্থাৎ যারা ক্ষুধা ও তৃষ্ণার তাড়নায়, বিশেষ করে পরিবারের স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধ মা-বাবার ক্ষুধার্ত আর্তনাদের তাড়নায় ত্রাণের লাইনে দাঁড়াবে, তাদেরকে টার্গেট করে কখনো উপরে হেলিকপ্টার থেকে মেশিনগানের গুলি ছুড়ে কিংবা বোমার আঘাতে হত্যা করা হবে। অনেকটা জলে কুমির এবং ডাঙায় বাঘের মতোই অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই গাজা বাসীর।

সমগ্র গাজা শহরকে বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর তাদের সেনাবাহিনী দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে, ফলে পালাবার কোনো পথ নেই। বাইরের ত্রাণবাহী ট্রাক প্রথমে সীমান্তে আটকে দেওয়া হয়েছিল। এখন বিভিন্ন চাপের ফলে ত্রাণ ঢুকার অনুমতি দিলেও যারা সেই ত্রাণ নিতে আসছে, তাদের গুলি করে হত্যা করছে ইজরাইলি সেনা। এমন এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে যে ত্রাণ নিতে এলেও মরবে, না নিতে এলে অভুক্ত অবস্থায় মরবে। অতএব, সমস্ত গাজাবাসীর এখন একটাই রাস্তা, মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। পুরো গাজা এলাকাকে এইভাবে জনশূন্য করে দিয়ে সেই এলাকায় ইজরায়েলের বসতি বা আবাসিক বাড়ানো। ১৯৪৮ সালে ইজরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণার পর তার যা আয়তন ছিল, তার পর প্যালেস্টাইনিদের তাদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করতে করতে আজ তার কয়েকগুণ এলাকা বাড়িয়ে নিজেদের বসতি বিস্তার ঘটিয়েছে ইজরায়েল। আগামী দিনে সমগ্র গাজার পুরো এলাকাটাই তারা দখল করে সেখান থেকে মানুষদের মেরে এবং তাড়িয়ে দিয়ে নিজেদের এলাকা পুরোপুরি বাড়িয়ে নেওয়া। এটাই তাদের লক্ষ্য।

গাজাবাসীদের হত্যার তৃতীয় যে প্রক্রিয়া নিয়েছে ইজরায়েল, তা হলো ভাতে মারা। বোমা, বন্দুক, কামানের গোলায় মৃত্যুর পরও যারা বেঁচে গেল, তাদের যদি মৃত্যু নিশ্চিত করতে হয়, তাহলে বেঁচে থাকার যে রসদ, সেই খাদ্য এবং পানির সংকট করে দাও। তাহলে বন্দুকের গুলিও আর খরচ করতে হবে না, এমনিতেই তারা মারা যাবে। হচ্ছে ও ঠিক তাই। ইজরায়েল এই পর্যন্ত ১২০০ জন শিশুকে বন্দি করে রেখেছে, কোথায় রেখেছে, আদৌ তারা বেঁচে আছে কিনা, কেউ সেই খবর জানে না। ইতিমধ্যে ৫৭ জন শিশু অপুষ্টিতে ভুগে মারা গেছে। গত জানুয়ারি থেকে যে, এই ৫ মাসে ১৬৭৩৬ জন শিশু অপুষ্টির শিকার হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই প্রায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি অর্থাৎ প্রতি দিনে গড় ১১২ জন শিশু এই সমস্যায় ভুগছে। এদের বেশিরভাগেরই উপযুক্ত পরিমাণে শিশু খাদ্য এবং পানীয়ের বিশাল অভাব, অন্যদিকে তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলো আর বেশিরভাগই অস্তিত্ব নেই। বেশিরভাগ হাসপাতালগুলোকে রোগীসহ গুঁড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে শিশুদের চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামোসহ হাসপাতালের ব্যাপক অভাব রয়েছে। এইভাবে যদি চলতে থাকে, আগামী দিনে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের এবং তার কারণে মৃত্যুর মিছিল যে বাড়বে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গাজার শিশুরা এখন যারা ইজরায়েলের সেনার বন্দুকের টার্গেট থেকে রক্ষা পেয়েছে, আগামী দিনে অভুক্ত পেট এবং তার থেকে অপুষ্টি ও মৃত্যুর দিকে দিন গোনা-এটাই গাজার শিশুদের ভবিষ্যৎ।

জাতিসংঘের জেনেভা সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছিল যুদ্ধরত দেশগুলো কোনভাবেই তাদের আক্রমণের লক্ষ্য শিশুদের বাসস্থান, স্কুল বা হাসপাতালকে টার্গেট করতে পারবে না। যদি কোন দেশ এই ঘোষণা অমান্য করে, তাহলে তাকে যুদ্ধ অপরাধী ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক আদালতে তার বিচার করে শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু এই নিয়ম যে আজ আমেরিকা ও তার তাবেদার রাষ্ট্রগুলোর কাছে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না, তা ইজরায়েলের কার্যকলাপ দেখে বোঝা যাচ্ছে। ইজরায়েল যেখানে যুদ্ধের প্রধান টার্গেট করেছে শিশুদের। ত্রাণ শিবিরে হামলা, ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় হামলা এবং খাদ্য ও পানীয় জলের অভাব ঘটিয়ে আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া, কোন কিছুই বাদ রাখেনি। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে বিচার বসিয়ে শাস্তি দেওয়া তো দূরের কথা, সামান্য শিশু হত্যালীলা চালানো থেকেও ইজরায়েলকে আটকাতে পারছে না।

আর যাকে দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে, সেই আমেরিকার বন্ধু ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, যিনি নিজেই একজন আসামী। ইজরায়েলের আদালতে আর্থিক ঘুষকাণ্ডে তার বিচার চলছে। যে কোনো সময় বিচারের রায়ে তার শাস্তি হতে পারে। ২০২৩ সালে যখন তিনি গাজায় যুদ্ধ শুরু করেন, সেই সময় বিচারের রায় বের হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই তিনি যুদ্ধ শুরু করে গাজাবাসীদের গণহত্যা শুরু করে দিলেন। কোর্টের কাছে সময় চাইলেন, যাতে তার বিচার কিছু দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। দেশে যুদ্ধ চলছে, অতএব তার পর থেকে বিচার পিছিয়ে পিছিয়ে এসেছে। এর প্রতিবাদে যে সমস্ত ইজরায়েলি প্রতিবাদ করেছেন, তাদেরও জেলে ঢুকিয়ে বিনা বিচারে আটকে রাখা হয়েছে। আজ গাজা দখলের পর তা যখন প্রায় হত্যাকাণ্ড শেষের দিকে এগাচ্ছে, তখন ইজরায়েলের আদালত জানিয়েছে যে আর বিচার দেরি করা যাবে না। বিচার প্রক্রিয়া আবার শুরু হবে। এই রকম একজন আসামীকে দিয়ে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটানোর নেপথ্যে যারা আছেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন প্রতিবাদ জানালেও জাতিসংঘ বা বৃহৎ রাষ্ট্রগুলো প্রায় নীরব। আমরা সবাই তারিয়ে তারিয়ে দেখছি এই হত্যাকাণ্ড, ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি সারা দিনের নানা ঘটনার মাঝে, কিন্তু ইতিহাস আমাদের বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে, সেই হিটলারের ইহুদী নিধনের মতোই, সমাজে মানুষ আছে। কিন্তু মানবিকতা খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে।

আর আমাদের পশ্চিমবঙ্গে একটা কথা প্রচলিত আছে যে মুসলিমরা নাকি খুব ঐক্যবদ্ধ, যে কোন বিষয়ে তারা একজোট হয়ে লড়াই করতে পারে। ছোট থেকে এই কথা শুনে শুনে কান প্রায় ঝালাপালা হয়ে যাওয়ার অবস্থা। কিন্তু আজ যখন মুসলমানদের একটি অংশকে দীর্ঘদিন ধরে নারকীয়ভাবে হত্যা করা হচ্ছে, শিশুদের কামানের গোলায় উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তখন একটা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শেষ করে দেওয়ার কাজ চলছে। ঠিক সেই সময় তার চারপাশে যে মুসলিম দেশগুলো আছে, সেই আরব রাষ্ট্রগুলো এইসব দেখেও না দেখার ভান করছে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করা দূরের কথা, ইজরায়েলের ভয়ে সামান্য ত্রাণ সামগ্রীও তারা দিতে পারছেন না। ইজরায়েলের হুমকির কাছে মাথা নত করে বসে আছেন। যে আমেরিকা ইজরায়েলের সেনাবাহিনীর জন্য প্রতিবছর ৩.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করে, সেই আমেরিকার বিরুদ্ধে বাণিজ্য বন্ধ করা দূরে থাকুক, তারা আরও সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে বাণিজ্যে সাহায্য করছে। কেউ কেউ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির রোষানলে পড়ে যাওয়ার ভয়ে একেবারে গুটিয়ে আছে। কেউ আবার তাদের পদলেহনে ব্যস্ত। আগামী বিশ্ব কি এইভাবে জোরজার মুলুক তার, বা আপন স্বার্থের নেশায় চুপ করে বসে থাকবে? মানবিকতাবোধহীন এক নতুন সমাজের দিকে কি আমরা এগোচ্ছি না? এই পরিস্থিতিতে আমাদের মনে রাখতে হবে, যদি এই সমাজকে কেউ বাঁচায় বা রক্ষা করে, সে হচ্ছে মানুষ, বা মানবতা। কোন ধর্ম বা ঈশ্বর বা আল্লাহর কোন শক্তি কিন্তু বাঁচাতে আসেনি, আগামী দিনেও আসবে না। তাই এই ধর্মীয় শক্তিকে মানুষ যদি পরাস্ত করতে পারে, তবেই এই হিংস্র শক্তিকে কিছুটা হলেও রুখে দিতে পারবে, এই আমার ধারণা।

রাধাপদ দাস
রাধাপদ দাস

শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক