বুধবার কলকাতায় রাজনৈতিক নেতাদের যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এটা গণতন্ত্র বিরোধী। পুলিশের স্বৈরাচারী দমন-পীড়ন কার্যকলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। গ্রেপ্তারি সময় রাজনৈতিক নেতাদের প্রকাশ্যে বলতে শুনলাম " যারা প্রকাশ্যে ঘৃণা ছড়াচ্ছে তাদের বেলায় কিচ্ছু হচ্ছে না, আমরা করলেই পুলিশ গ্রেপ্তার করছে।" আইন বিভাগের উপর প্রকাশ্যে এমন অভিযোগ উঠে আসলে তা আমাদের দেশের সংবিধানের উপরে আঘাত আসা। সেক্ষেত্রে পুলিশকে এই ভাবে দমন-পীড়ন থেকে বিরত থাকা উচিত। রাজ্য সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে পুলিশ যাতে আইন মেনে কাজকর্ম করে। মানুষের আন্দোলন করার গণতান্ত্রিক অধিকারকে কোনভাবেই দমন-পীড়ন করে বন্ধ না করে। পুলিশের উচিত যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহার করা। নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত ধারা দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জার। সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পিত অভিযোগের ধারা দেওয়া হয়েছে। অদ্ভুত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে যে বুধবারে এই মিছিলের পুলিশের পক্ষ থেকে কোন অনুমতি ছিল না। এবং কোন ধরনামঞ্চ করা হয়নি। প্রথম কথা হচ্ছে মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করবেন। তাতে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে কেন ? পুলিশের অনুমতির কোন প্রয়োজন নেই। দেখতে হবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে কোন বেআইনি কাজকর্ম হচ্ছে কিনা। প্রায় সব ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুলিশই প্ররোচনা দিয়ে মানুষকে বেআইনি কাজ করতে বাধ্য করে। দ্বিতীয়ত আরেকটি প্রশ্ন আসছে আজকের এই মিছিল বা ধর্ণামঞ্চ এর আয়োজক কতকগুলি রাজনৈতিক দলের যৌথ মঞ্চ। তাহলে এখানে কতকগুলি মুসলিম সামাজিক সংগঠন অংশগ্রহণ করল কিভাবে? তা হলে এই মঞ্চ কি মুসলিম সম্প্রদায়ের মঞ্চ? এই মঞ্চের সদস্য রাজনৈতিক দলগুলো কি মুসলিম রাজনৈতিক দল? যারা সব সময় বলেন রাজনীতি করি না, তারা কেন আজকের মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিলেন? এই মঞ্চ যদি রাজনৈতিক মঞ্চ হয়, কোন সম্প্রদায়ের মঞ্চ না হয় তা হলে এ লড়াই বাংলাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর যদি রাজনৈতিক মঞ্চ না হয়ে কোন সম্প্রদায়ের মঞ্চ হয় তা হলে এ লড়াই বাংলাকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দেবে। বিজেপি অপপ্রচার চালাবে মুসলিমরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। ফলে ধর্মীয় মেরুকরণ করতে সুবিধা হবে। বিজেপি যা চাইছে তাতেই আমাদের তোললা দেওয়া হয়ে যাবে।
এই আন্দোলনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে প্রথমেই স্পষ্ট করতে হবে এই মঞ্চ রাজনৈতিক মঞ্চ, না সামাজিক মঞ্চ, না মুসলিম সম্প্রদায়ের মঞ্চ? একে রাজনৈতিক মঞ্চ করতে হলে প্রথমেই সামাজিক সংগঠনগুলোকে এখান থেকে দূরে রাখতে হবে। রাজ্যের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী এই মঞ্চকে তৃতীয় ফ্রন্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সিপিআইএম, কংগ্রেস থেকে সমান দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিআইএম ছাড়া বাকি দল নিয়ে তৃতীয় শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
বি:দ্র: - আমাদের ওয়েব সাইটের একটি বিভাগের নাম 'মতামত'। এখানে বিভিন্ন মানুষ তাঁর মতামত জ্ঞাপন করতে পারেন। এই মতামত লেখকের ব্যক্তিগত, ওয়েবসাইটের সাথে এই মতামতের কোন সম্পর্ক নেই।